28. মূসা বলল, তিনি পূর্ব, পশ্চিম ও এতদুভয়ের মধ্যবর্তী সব কিছুর পালনকর্তা, যদি তোমরা বোঝ।
29. ফেরাউন বলল, তুমি যদি আমার পরিবর্তে অন্যকে উপাস্যরূপে গ্রহণ কর তবে আমি অবশ্যই তোমাকে কারাগারে নিক্ষেপ করব।
30. মূসা বলল, আমি তোমার কাছে কোন স্পষ্ট বিষয় নিয়ে আগমন করলেও কি?
31. ফেরাউন বলল, তুমি সত্যবাদী হলে তা উপস্থিত কর।
32. অতঃপর তিনি লাঠি নিক্ষেপ করলে মুহূর্তের মধ্যে তা সুস্পষ্ট অজগর হয়ে গেল।
33. আর তিনি তার হাত বের করলেন, তৎক্ষণাৎ তা দর্শকদের কাছে সুশুভ্র প্রতিভাত হলো।
34. ফেরাউন তার পরিষদবর্গকে বলল, নিশ্চয় এ একজন সুদক্ষ জাদুকর।
35. সে তার জাদু বলে তোমাদেরকে তোমাদের দেশ থেকে বহিস্কার করতে চায়। অতএব তোমাদের মত কি?
36. তারা বলল, তাকে ও তার ভাইকে কিছু অবকাশ দিন এবং শহরে শহরে ঘোষক প্রেরণ করুন।
37. তারা যেন আপনার কাছে প্রত্যেকটি দক্ষ জাদুকর কে উপস্থিত করে।
38. অতঃপর এক নির্দিষ্ট দিনে জাদুকরদেরকে একত্রিত করা হল।
39. এবং জনগণের মধ্যে ঘোষণা করা হল, তোমরাও সমবেত হও।
40. যাতে আমরা জাদুকরদের অনুসরণ করতে পারি-যদি তারাই বিজয়ী হয়।
41. যখন যাদুকররা আগমণ করল, তখন ফেরআউনকে বলল, যদি আমরা বিজয়ী হই, তবে আমরা পুরস্কার পাব তো?
42. ফেরাউন বলল, হঁ্যা এবং তখন তোমরা আমার নৈকট্যশীলদের অন্তর্ভুক্ত হবে।
43. মূসা (আঃ) তাদেরকে বললেন, নিক্ষেপ কর তোমরা যা নিক্ষেপ করবে।
44. অতঃপর তারা তাদের রশি ও লাঠি নিক্ষেপ করল এবং বলল, ফেরাউনের ইযযতের কসম, আমরাই বিজয়ী হব।
45. অতঃপর মূসা তাঁর লাঠি নিক্ষেপ করল, হঠাৎ তা তাদের অলীক কীর্তিগুলোকে গ্রাস করতে লাগল।
46. তখন জাদুকররা সেজদায় নত হয়ে গেল।
47. তারা বলল, আমরা রাব্বুল আলামীনের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করলাম।
48. যিনি মূসা ও হারুনের রব।
49. ফেরাউন বলল, আমার অনুমতি দানের পূর্বেই তোমরা কি তাকে মেনে নিলে? নিশ্চয় সে তোমাদের প্রধান, যে তোমাদেরকে জাদু শিক্ষা দিয়েছে। শীঘ্রই তোমরা পরিণাম জানতে পারবে। আমি অবশ্যই তোমাদের হাত ও পা বিপরীত দিক থেকে কর্তন করব। এবং তোমাদের সবাইকে শূলে চড়াব।
50. তারা বলল, কোন ক্ষতি নেই। আমরা আমাদের পালনকর্তার কাছে প্রত্যাবর্তন করব।
51. আমরা আশা করি, আমাদের পালনকর্তা আমাদের ক্রটি-বিচ্যুতি মার্জনা করবেন। কারণ, আমরা বিশ্বাস স্থাপনকারীদের মধ্যে অগ্রণী।
52. আমি মূসাকে আদেশ করলাম যে, আমার বান্দাদেরকে নিয়ে রাত্রিযোগে বের হয়ে যাও, নিশ্চয় তোমাদের পশ্চাদ্ধাবন করা হবে।
53. অতঃপর ফেরাউন শহরে শহরে সংগ্রাহকদেরকে প্রেরণ করল,
54. নিশ্চয় এরা (বনী-ইসরাঈলরা) ক্ষুদ্র একটি দল।
55. এবং তারা আমাদের ক্রোধের উদ্রেক করেছে।
56. এবং আমরা সবাই সদা শংকিত।
57. অতঃপর আমি ফেরআউনের দলকে তাদের বাগ-বাগিচা ও ঝর্ণাসমূহ থেকে বহিষ্কার করলাম।
58. এবং ধন-ভান্ডার ও মনোরম স্থানসমূহ থেকে।
59. এরূপই হয়েছিল এবং বনী-ইসলাঈলকে করে দিলাম এসবের মালিক।
60. অতঃপর সুর্যোদয়ের সময় তারা তাদের পশ্চাদ্ধাবন করল।
61. যখন উভয় দল পরস্পরকে দেখল, তখন মূসার সঙ্গীরা বলল, আমরা যে ধরা পড়ে গেলাম।
62. মূসা বলল, কখনই নয়, আমার সাথে আছেন আমার পালনকর্তা। তিনি আমাকে পথ বলে দেবেন।
63. অতঃপর আমি মূসাকে আদেশ করলাম, তোমার লাঠি দ্বারা সমূদ্রকে আঘাত কর। ফলে, তা বিদীর্ণ হয়ে গেল এবং প্রত্যেক ভাগ বিশাল পর্বতসদৃশ হয়ে গেল।
64. আমি সেথায় অপর দলকে পৌঁছিয়ে দিলাম।
65. এবং মূসা ও তাঁর সংগীদের সবাইকে বাঁচিয়ে দিলাম।
66. অতঃপর অপর দলটিকে নিমজ্জত কললাম।
67. নিশ্চয় এতে একটি নিদর্শন আছে এবং তাদের অধিকাংশই বিশ্বাসী ছিল না।
192. এই কোরআন তো বিশ্ব-জাহানের পালনকর্তার নিকট থেকে অবতীর্ণ।
193. বিশ্বস্ত ফেরেশতা একে নিয়ে অবতরণ করেছে।
194. আপনার অন্তরে, যাতে আপনি ভীতি প্রদর্শণকারীদের অন্তর্ভুক্ত হন,
195. সুস্পষ্ট আরবী ভাষায়।
196. নিশ্চয় এর উল্লেখ আছে পূর্ববর্তী কিতাবসমূহে।
197. তাদের জন্যে এটা কি নিদর্শন নয় যে, বনী-ইসরাঈলের আলেমগণ এটা অবগত আছে?
198. যদি আমি একে কোন ভিন্নভাষীর প্রতি অবতীর্ণ করতাম,
199. অতঃপর তিনি তা তাদের কাছে পাঠ করতেন, তবে তারা তাতে বিশ্বাস স্থাপন করত না।
200. এমনিভাবে আমি গোনাহগারদের অন্তরে অবিশ্বাস সঞ্চার করেছি।
201. তারা এর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করবে না, যে পর্যন্ত প্রত্যক্ষ না করে মর্মন্তুদ আযাব।
202. অতঃপর তা আকস্মিকভাবে তাদের কাছে এসে পড়বে, তারা তা বুঝতে ও পারবে না।
203. তখন তারা বলবে, আমরা কি অবকাশ পাব না?
204. তারা কি আমার শাস্তি দ্রুত কামনা করে?
205. আপনি ভেবে দেখুন তো, যদি আমি তাদেরকে বছরের পর বছর ভোগ-বিলাস করতে দেই,
206. অতঃপর যে বিষয়ে তাদেরকে ওয়াদা দেয়া হত, তা তাদের কাছে এসে পড়ে।
207. তখন তাদের ভোগ বিলাস তা তাদের কি কোন উপকারে আসবে?
208. আমি কোন জনপদ ধ্বংস করিনি; কিন্তু এমতাবস্থায় যে, তারা সতর্ককারী ছিল।
209. স্মরণ করানোর জন্যে, এবং আমার কাজ অন্যায়াচরণ নয়।
210. এই কোরআন শয়তানরা অবতীর্ণ করেনি।
211. তারা এ কাজের উপযুক্ত নয় এবং তারা এর সামর্থ?451; রাখে না।
212. তাদেরকে তো শ্রবণের জায়গা থেকে দূরে রাখা রয়েছে।
213. অতএব, আপনি আল্লাহর সাথে অন্য উপাস্যকে আহবান করবেন না। করলে শাস্তিতে পতিত হবেন।
214. আপনি নিকটতম আত্মীয়দেরকে সতর্ক করে দিন।
215. এবং আপনার অনুসারী মুমিনদের প্রতি সদয় হোন।
216. যদি তারা আপনার অবাধ্য করে, তবে বলে দিন, তোমরা যা কর, তা থেকে আমি মুক্ত।
217. আপনি ভরসা করুন পরাক্রমশালী, পরম দয়ালুর উপর,
218. যিনি আপনাকে দেখেন যখন আপনি নামাযে দন্ডায়মান হন,
219. এবং নামাযীদের সাথে উঠাবসা করেন।
220. নিশ্চয় তিনি সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞানী।
221. আমি আপনাকে বলব কি কার নিকট শয়তানরা অবতরণ করে?
222. তারা অবতীর্ণ হয় প্রত্যেক মিথ্যাবাদী, গোনাহগারের উপর।
223. তারা শ্রুত কথা এনে দেয় এবং তাদের অধিকাংশই মিথ্যাবাদী।
224. বিভ্রান্ত লোকেরাই কবিদের অনুসরণ করে।
225. তুমি কি দেখ না যে, তারা প্রতি ময়দানেই উদভ্রান্ত হয়ে ফিরে?
226. এবং এমন কথা বলে, যা তারা করে না।
227. তবে তাদের কথা ভিন্ন, যারা বিশ্বাস স্থাপন করে ও সৎকর্ম করে এবং আল্লাহ কে খুব স্মরণ করে এবং নিপীড়িত হওয়ার পর প্রতিশোধ গ্রহণ করে। নিপীড়নকারীরা শীঘ্রই জানতে পারবে তাদের গন্তব্যস্থল কিরূপ।